খারাপ সময়েও ভালো থাকার চেষ্টা , আমার অবসরের দিন গুলো



কটা সময় অনেক ডায়রী লিখতাম । নিজের ভালো লাগা খারাপ লাগা সব কিছুই বলা হতো ডায়রীর কাছেই । প্রেমিকা , বন্ধু , সহপাঠি যাই বলিনা কেন সব কিছুই ছিলো এই ডায়রী । প্রতি বছরের প্রথম দিনেই নতুন একজন কে ঘরে তুলি । শুরু হয় আমার নতুন প্রেম , নতুন সংসার । ইদানীং আর তা হয় না । যান্ত্রিক জীবন , ব্যস্ততা , হাতাশা , জীবনের পিছে ছুটতে গিয়ে  কেমন জানি হয়ে গেছি । এখন যাই লিখি তা হলো, ফেইসবুকের পাতায় , বিভিন্ন ব্লগ ,টুইটার ,এই মিলিয়ে কেটে যায় আমার দিন , আমার সময় । এখনো মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে একদিন একটা নতুন ডায়রী নিয়ে বসবো ।  কি রাত,  কি দিন , সব পার হয়ে যাবে , কিন্তু আমার লেখা থামবে না । অনেক লিখবো । এ পাতা ও পাতা , সব সাদার উপর আমি কালো কালির দাগ দিবো । কিন্তু হয়ে উঠে না । এই বছরের প্রথম থেকেই চিন্তা করছি , আবার শুরু করবো , কিন্তু অর্থ নেই , থাকলে সময় নেই । এই ভাবে আর কেনা হলো না আমার নতুন প্রেমিকাকে । তাই চিন্তা করলাম এখন আর এই বাড়ি ওই বাড়ি না ঘুরে , ওহ বাড়ি ? বাড়ি বলতে এই খানে ওয়েব সাইট গুলোকে বুঝানো হয়েছে । নিজের ব্লগেই লিখবো , আর যেখানে এইকটা ক্যাটাগরি থাকবে ডায়রী নামে । যেথায় আমি হারাবো , আবার নিজেকে খুজে পাবো । যেখানে লিখবো আমার দিন আমার রাতের কথা । যে পৃষ্ঠায় লিখতে লিখতে রাত পেরিয়ে ভোরের কাক ডাকতে শুরু করবে , দুরে মোয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি শুনা যাবে । যখন চারদিকের মানুষ কাজে বের হবে , তখন আমি ঘুমাবো । তখন আমার রাত হবে । ঠিকই রাত জাগা হয় , কিন্তু আমার আর ডায়রী লেখা হয়না । কিছু দিন আগেই একটা পুরাতন প্রেমিকাকে আবার নতুন করে সাজিয়ে জ্বালানো শুরু করেছি । তার বুকে একে দিচ্ছি আমার দুঃখ আমার কষ্ট গুলোকে । তাকে এখনো সুখ দেই নাই , দিয়েছি কষ্ট , এখনো দিয়েই যাচ্ছি । রুমের সেই নিভু নিভু আলোতে তার সাথে দীর্ঘ আলাপ হয়েছে কয়েকবার । কিন্তু হয়নি আমার নিজের ব্লগে আর ডায়রী নামক একটা পৃষ্ঠা খোলা । হয়তো হতো , আবার হয়তো বা না । কারণ আমি সেই আগের আমি নেই । কাছের মানুষ গুলো আমায় ভাঙ্গা কুলা বানিয়ে দিয়েছে । প্রয়োজন শেষ ছুড়ে ফেলে দিয়েছে । না অভিমান করিস না , ঠিক এই ভাবেই আমি সাদা কাগজ গুলোকে যন্ত্রণা দেই  যে ভাবে তোকে দিচ্ছি । বস্তুত আমি লিখতে বসলে লেখা গুলো এই দিক ওই দিক ঘুরে ,বট গাছের ন্যায়ে প্যাচিয়ে আবার একটা স্থানে আসে , তবে সব সময় না । তোকে যন্ত্রণা দিতাম না । দেওয়ার কারণ হলো , কাছের মানুষ গুলোর মতো আমার গত কয়েক বছরের সকল প্রেমিকারাই আমার কাছ থেকে হারিয়ে গেছে । তাদের জন্য খুব দুঃখ হয় , কারণ আমি তাদের যতো টা যত্নে রাখতাম , এখনকি তারা ততটাই যত্ন পাচ্ছে ? নাকি কোন মুড়ি চানাচুরের ঠোঙ্গা হয়ে প্রেমিক প্রেমিকার হাতের স্পর্শ পেয়েছে ? কি জানি আমি তো তাদের খবরই জানি না । তারা একা যায়নি . সাথে করে নিয়ে গেছে হিমাদ্রী , মৃণালিণী, অনিকেত আরো কতোক জনকে । অবশেষে সবাইকে হারিয়ে যখন আমি একা তখনই তোকে বেচে নিলাম নতুন করে । তুই ঠিক ধরেছিস , আমি অনেকটাই সেলফিস , নিজের স্বার্থের জন্য এখন তোকে কাছে টেনে নিয়েছি । কি করবো বল আমি যে সমাজে থাকি ওখানে আমাদের কে সেলফিস হতেই শেখায় । এই খানে শেখানো হয় প্রয়োজন পুরিয়ে গেলে কিভাবে একজন অন্যজনকে ছুড়ে ফেলে দেবে । এই খানে একজন অন্যজনকে মারার জন্য ট্রেনিং নেয় । অনেক চেষ্টা করি নিজেকে দুরে রাখার , জানিনা কতোটা পারি , তবে চেষ্টা করি । অল্পতেই হাপিয়ে গেলি ? এখনোতো অনেক কিছুই বলার বাকি , অনেক পথ চলার বাকি । আচ্ছা তুই ও কি সবার মতো চলে যাবি ? যাই হোক , চলে গেলে তো আর কিছুই করার নেই , কি আর করবো আমি আবার ভবঘুরে হয়ে যাবো , ঘুরতে ঘুরতে নতুন কাউকে খুজে নিবো । অনেক দিন পর এতোগুলো কথা কারোর সাথে বললাম । ওহ তোকে বলা হয়নি । আমি কিন্তু প্রচন্ড রকমের ভীতু । মরতে চেয়েছি, পারিনি । মোট চার বার কিন্তু না পারিনি । বেচেই গেছি । আরে দুর আমিতো চেষ্টাই করি নি । আমার দ্বারা বাবু এই সব হবে না ।  কয়েকদিন যাবৎ বাসা থেকে খুব একটা বের হইনা । কোথাও যাই না । রাস্তার ধুলো গায়ে মাখি না । শুনিনা মুক্ত আকাশের পাখিদের ডাক । অবশ্যই বাসায় মিনি, টুই,টি আছে , চিনিটা মরা যাওয়ার পর মিনি টুই টির সাথেই দিন কাটাচ্ছে । ঘটনাটা এখন দুই বধু এক স্বামী হয়ে গেছে । ওদের মাঝেও মাঝে মাঝে অনেক ঝগড়া হয় । আমাদের থেকে শিখে গেছে । অন্যদিনের মতো আজও সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুটা সময় ওদের সাথে , তারপর এই দিক ওই দিক করতে করতে দিন পার । অবশ্য আজ বাংলাদেশের খেলা ছিলো , এই দেখতে দেখতে , শুনতে শুনতে দিন পার করে দিয়েছি । জিতে গেছে বাংলাদেশ । আমি জানি এই রকম একদিন আমিও জিতে যাবো । আর তাইতো এই ভাবে ছুটে চলছি । কেউ দুরে সরিয়ে দিলেও ওই সব নিয়ে মন খারাপ হয় না । কিংবা করি না । নিজের মতো ভাবি , নিজের মতো চলি । তবে হ্যাঁ বেশ কিছু ধার দেনা হয়েছে , এক এক করে ওগুলো শোধ করতে হবে । আশঅ করি হয়ে যাবে । এই প্রশ্ন করিস নে , কিভাবে হবে ?ওটা আমি জানি নে বাবু । এই ভাবেই একটা একটা করে দিন চলে যাচ্ছে । আর কেটে যাচ্ছে আমার অবসর সময় । আবার ছুটবো । আবার দৌড়াবো । আর তো মাত্র কয়েকটা দিন । কিন্তু তোর সাথে কথা হবে । অনেক কথা হবে । পারবি তো আমার কষ্ট গুলো বহন করতে ? নাকি ভয়ে পালিয়ে যাবি ? সে যাই করিস , আমি কিন্তু দিবোই । কারণ আমি একটা সেলফিস । আগে না থাকলেও এখন হয়ে গেছি । ভালো থাক .. একটু হিমাদ্রীকে নিয়ে ভাববো .. অনেক দিন হয়ে গেছে তার সাথে কথা হয় না । ওর সাথে একটু কথা বলবো । না আমি একাই বাসায় আর কেউ নেই । ছোটন , ভুপেন , রজনীকা ,কেউ না । আমি একা । ওহ তোকেতো বলাই হয়নি , নুরীর কথা । যাই হোক আজ আর না , অন্য দিন বলবো । ভালো থাক অনেক ভালো থাক । আর আমিও ভালো থাকি । ক্ষণিকের বিদায় । 

Comments

Popular posts from this blog

প্রবাহমান জীবন ও কিছু কথা!

"ফরেস্ট গাম্প " একটি অনুপ্রেরণার গল্প, একটি মৃত প্রাণকে তাজা করার সিনেমা

পানাম নগর, আমার এবেলা ওবেলা