গর্জন, বর্জন , বর্ষণ : অতঃপর ডুবে ডুব দেওয়া । একজন ফারুকীর সাথে আমার ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট

টাইটেল কথন : প্রতিটা বিষয় লিখার আগেই আমার টাইটেল ঠিক করতে হয় না হলে লেখা এই দিক ওই দিক ঘুরতে ঘুরতে বিশাল আকাশের তরে হারিয়ে যায় । এখন আপনার প্রশ্ন জাগতে পারে এমন টাইটেল কেন ? বিষয়টা আমিও অনেক চিন্তা করেছি কেন দিলাম : ওহ মনে পড়েছে , শেষ দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছে তার মধ্যে ঢাকা অ্যাটাক এর থেকেও ডুব নিয়ে আলাচনা সামালোচনা, পর্যালোচনা কোনটার ই কমতি ছিলো না, হয়তো তার প্রেক্ষিতেই আমার এই টাইটেল দেওয়া , আর প্রতিটি সিনেমাই পরিচালকের কাছে সন্তান । আপনার বেড রুমে একটা বই রাখলেন মানে ওই পরিচালক আপনার রুমে আছে , ঠিক একই ভাবে  , যে সিনেমাটি আমি দেখছি , আমার কাছে মনে হয় আমি সেই সিনেমার পরিচালকেই সময় দিচ্ছি । সেটা আমার জন্য হোক আর যেই কারণেই হোক । আর বিস্তারিত গেলাম না , প্রতিটি কথাই নিজের ব্যক্তিগত , পচন্দ না হলে এড়িয়ে চলে যান ।

আজাইরা আলাপ :  প্রতিটা রিভিউ বলি আর যাই বলি নিজের আলাপ না করতে পারলে কেমন জানি খুত খুত মনে হয় । আসলে সব কিছুর উপর তো নিজের ব্যান্ডিং তাই নয় কি ? প্রতি বারের মতো এইবার ও বলে রাখি আমি কিন্তু ভাই ক্রিটিক্স না । একজন সাধারণ দর্শক । একজন পরিচালক যখন কোন সিনেমা বা ভিডিও শট নেন তখন তাকে বিভিন্ন এ্যাঙ্গেল থেকে শট নিতে হয় । যদিও সেই কাজটা ক্যামেরা ম্যান করে  , তবে সেটা পরিচালকের কথায় । এই যেমন , ডিরেক্টর পয়েন্ট অব ভিউ  , অডিয়েন্স পয়েন্ট অব ভিউ , ক্যারেক্টার পয়েন্ট অব ভিউ , বার্ডস আই কিংবা গড পয়ন্ট অব ভিউ । আর যখন সেই কাজ পর্দায় দেখানো হয় তখন সেটা তিন ভিউ দেখা হয় , মানে তিন শ্রেণীর মানুষ দেখে । ক্রিটিক্স পয়েন্ট অব ভিউ , দর্শক পয়েন্ট অব ভিউ , ডিরেক্টর পয়েন্ট অব ভিউ , কার ভিউ কেমন সেই আলোচনায় আজ না যাই তাহলে রাত পার , আপনার ও সময় কাত ।   আমি ভাই দর্শক পয়েন্ট অব ভিউ থেকে দেখি । কারণ সিনেমা দেখতে ভালোই লাগে , তাই ।  যাই হোক চলুন মুল আলোচনায় চলে যাই ........

সিনেমা পরিচিতি : নতুন করে দেওয়ার দরকার নাই তারপরেও ফরমালিটি মেন্টেইন যাকে বলে ..


নাম : ডুব (DOOB)
পরিচালক : মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
প্রযোজক : আবদুল আজিজ ,ইরফান খান
রচয়িতা : মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
অভিনেতা :
ইরফান খান
নুসরাত ইমরোজ তিশা
রোকেয়া প্রাচী
পার্ণো মিত্র .
পরিবেশক : জাজ মাল্টিমিডিয়া
                             এসকে মুভিজ
দৈর্ঘ্য : ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট
মুক্তি ২৭ অক্টোবর, ২০১৭ [২][৩]
দেশ  :বাংলাদেশ
ভাষা : বাংলা
নির্মাণব্যয় ১২ কোটি টাকা






চলমান সিনেমা  : একটি অডিটরিয়াম , একটু পরেই অনুষ্ঠান শুরু হবে , কলেজের রি-ইউনিয়ন । দুটো মানুষ বাতাসা খাচ্ছে , একজন উঠে যেতেই অন্যজনের প্রবেশ , পাশা পাশি বসবে , কথা বলতে শুরু করবে  ,খানিক পরেই , ক্যামেরার মোশন শুরু হবে হারিয়ে যাবে শৈশবে । হারানো আর ফিরে আসা স্ক্রিনে ভেসে উঠবে , "ডুব" সিনেমা শুরু ।

কাহিনী সংক্ষেপ :  ভাই কিসের কাহিনী আবার লিখবেন এইটা হুমায়ন আহম্মেদ এর বায়োপিক বাদ দেন আপনার এই সব পেচাল ?
সরি ভাই ভুল হয়ে গেছে , আবার ও আমার লিখা শুরু , কে হুমায়ন , কার হুমায়ন , কোন হুমায়ন ?
মজা নেওয়া বন্ধ করেন , এইটা হুমায়ন আহম্মেদ এর বায়োপিক বলছি না ?
দুঃখিত ভাই আমি এই খানে বায়োপিক এর কিছুই পাই নি !!

 এই হলো কাহিনী সংক্ষেপ , বলতে গেলেই পাবলিক তেড়ে আসে । যাই হেকা প্রথম থেকেই এই সিনেমা নিয়ে হুমায়ন বক্ত এমন কি ওনার দ্বিতীয় স্ত্রীর ও কিছু আপত্তি ছিলো সাথে দাবী । আমার কিন্তু দাবী ছিলো না । আমি ভাই সিনেমাই দেখতে গেছি ,  কি দেখলাম সেটা একটু পরেই আসছে ।  আসলে কাহিনী নিয়ে আর কিছু বলবো না কারণ একটু পরেই আরো আলোচনা আছে ।

বিতর্ক :  এই কথা শেষ করা যাবে না । কারণ শুরু থেকেই এই সিনেমার সাথে বির্তক জড়িয়ে আছে ।

আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে প্রথম জানানো হয়, ডুব ছবিতে ইরফান খান অভিনয় করছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের চরিত্রে। অনুরূপে রোকেয়া প্রাচী হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন, কন্যা শীলার চরিত্রে তিশা এবং মেহের আফরোজ শাওনের চরিত্রে পার্ণো মিত্র অভিনয় করবেন বলে জানা যায়। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের কেউই এ সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে সেখানে প্রকাশিত হয়। হুমায়ূন আহমেদের জীবনিভিত্তিক চলচ্চিত্র হলে তার পরিবারের কেউ কেন জানবে না এই নিয়েই পরিবারের সদস্যরা, বিশেষ করে শাওন আপত্তি জানায়। এর পরপরই চলচ্চিত্রটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। কিন্তু পরিচালক জানান যে তারা কোনো জীবনীনির্ভর চলচ্চিত্র বানাচ্ছেন না।

পরবর্তীতে চলচ্চিত্রটি ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ তারিখে যৌথ প্রযোজনার প্রিভিউ কমিটি সেন্সর বোর্ড থেকে অনাপত্তিপত্র (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) পাওয়া সত্ত্বেও ১৬ ফেব্রুয়ারি তথ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশক্রমে সেই অনাপত্তিপত্র স্থগিত করা হয়।১৩ই ফেব্রুয়ারি শাওন সেন্সর বোর্ড বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়ে হুমায়ূন আহমেদের ভুল জীবনিনির্ভর চলচ্চিত্র নির্মাণের আশঙ্কা প্রকাশ করার পরপরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফারুকী জানায় এ স্থগিতাদেশের কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই।ডুব মৌলিক গল্পের উপর ভিত্তি করে নির্মিত বলেও তিনি জানান। সূত্র : উইকিপিডিয়া

আরো আছে যা দর্শক বির্তক । তা থাক অনেক হয়ে গেছে ।

আমার দেখায় ডুব : ভালো ছিলো , খারাপ বলার মতো সাহস আমার নেই , কারণ খারাপ সবাই বলতে পারে , আর যা সবাই পারে তা আমি পারি না  । এই টা কোন সিনেমা হলো ? এই কথাটি বলে দিলেই শেষ , কিন্তু জ্বি এটাই একটা সিনেমা , এই বলে একটা সিনেমা বানানো যে কতটা যন্ত্রণা আর আর্থিক তার কিছুটা ধারণা হলেও আছে । লোকেশন ভালো ছিলো , কিছু ক্যামেরার কাজ ও ভালো ছিলো, আর যেহেতু আমি চিরকুটের একজন লাভার সুতরাং সুমি আপার গান খানা ভালোই লাগছে ।

খারাপ দিক  : পরিচালকের বলা মিথ্যা কথা । একই সাথে ওই মিথ্যা বলি আর চুরি বলি সেটাকে সঠিক ব্যবহার না করতে পারা ।

ভালো খারাপের ডুব :  প্রথমেই বলে রেখে ছিলাম আমি কিন্তু হুমায়ন চিন্তা মাথায় না নিয়েই হলে গিয়েছিলাম কিন্তু ফারুকী সাহেব সেটা রাখতে দেন নাই । আমি শয়নে স্বপনেই তাকে দেখেছি । না এটি হুমায়ন আহম্মেদ এর বায়োপিক না , কারণ সেটা করলে আমি একজন হুমায়ন ভক্ত হিসেবেই ওনার নামে মামলা করে দিতাম । তিনি হুমায়ন আহম্মেদ এর জীবনী বিকৃত করেছেন এই বলে ।  আপনার হাতে যদি মহা ভারত দিয়ে বলা হয় এটার উপর একটা সিনেমা করেন , সময় দুই ঘন্ট তাহলে আপনাকে যেটা করতে হবে , সেটা হলো : একটু একটু করে , স্পেশাল বিষয় গুলো তুলো ধরতে হবে  ।  এই সিনোমার গল্প টি পরিচালক মানুক আর না মানুক হুমায়ন আহমেদ এর জীবনীর মডেল থেকেই নেওয়া । বিষয়টা হলো একটা মডিউল নিয়ে তারপর সেটাকে পরিচালক তার মতো করে সাজিয়ে নিয়েছেন ।  কিন্তু ওনার মতো একজন পরিচালকের কাছ থেকে এমন কাজ আশা করেন নাই কেউ । সিনেমাটি দেখে যা মনে হয়েছে সেটা হলো , ওনি অনেক তাহাহুড়া করেছেন , কেন ভাই ? সময় কি নাই , চাইলে তো দুই ঘন্টা কিংবা আরো একটু বাড়ানো যেত ? একটু বিস্তারিত দেখান । সিনেমায় ইরফানকে সবাই স্যার বলে কিন্তু কেন ? ওহ ওনি পরিচালক , লেখক  , কই সিনেমার কোথাও তা দেখি নাই , মিস করে গেছে ।  সিনেমায় কোন সাসপেন্স ছিলো না । শুরু হলো আর শেষ , পুরোটাই বিকৃত  হুমায়ন ময় ছিলো  ।



এই সিন কোথাও দেখা যায় নি । যাই হোক হয়তো সেন্সর কেটে দিছে ।

সব মিলিয়ে যদি বলতে হয় , তাহলে বলতে হবে , ওনার মতো পরিচলকের কাছ থেকে এমন কিছু আশা করি নাই । ভালো কিছু হতে পারতো । শুভ কামনা , আগামী দিনের  জন্য ।


কয়েকটি ডায়ালগ :  প্রথম স্ত্রীর বাবার দেওয়া , এই সব শর্ট ফিল্মে কি পেটে ভাত জোটে ? ভালো লাগছে বলার স্টাইল টা ।
প্রিয়জনদের কাছ থেকে মানুষ দূরে গেলে, প্রয়োজন ফুরালে সে মানুষটি মারা যায়
* মৃত্যু মানুষকে ভালোবাসা , সম্মান ফিরিয়ে দেয় । 

পরিচালক ছবিটি বানিয়েছেন আমার জন্য, মানে দর্শকের জন্য। দর্শক যখন সেটিকে ‍হ‌ুমায়ূনের জীবন বলেই বুঝে নিচ্ছে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তখন আমি বলবো, পরিচালক সেটিই বুঝাতে চেয়েছিলেন। পরিষ্কার?

শেষ সংক্ষেপ : ছয় নম্বার কাজে এসেও যদি আপনার মতো পরিচালকে বলতে হয় যে কিছু ভুলতো থাকবেই , সেটা মেনে নিলেও , মাত্রাটা মেপে নিবো ।। সুতরাং আবার ও দর্শক মনে প্রশ্ন জাগিয়ে তুললেন আপনার ছবি দর্শকদের জন্য না । ওই বিদেশী ফেস্টিবাল না কি ওই সব বাল ছালের জন্য । বালো থাকুন , আর এই সকল বস্তা পচা না বানিয়ে ভিন্ন কিছু করুন । 


ওহ ভুলেই গেছি রেটিং এর কথা : থাক না দেই ,, হলে গিয়ে দেখুন , নিজের রেটিং নিজে দিয়ে দিন ।

Comments

Popular posts from this blog

প্রবাহমান জীবন ও কিছু কথা!

"ফরেস্ট গাম্প " একটি অনুপ্রেরণার গল্প, একটি মৃত প্রাণকে তাজা করার সিনেমা

পানাম নগর, আমার এবেলা ওবেলা