জ্বি আমি দর্ষক ,ধর্ষক নই !! তবে সবার মতো নয় ।
লিখবো না , কিন্তু তারপরও লিখা হলো । লিখবো না , কারণ যেখানে সেনানিবাস এরিয়াতে ধর্ষণ হয় তার কোন বিচার হয় না । যেখানে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে বাবা-মেয়ে ট্রেনের নিচে আত্মহত্যা করে , সেখানে লিখে লাভ কি ? যেখানে সাগর-রুনি হত্যার বিচার নেই , এখন তো মনে হয় ওরা ও প্রেমে চ্যাকা খেয়ে আত্মহত্যা করেছে । কিন্তু না , তাদের খুন করা হয়েছে । কিছুই হয় নি আর হবেও না , হয়তো । যেখানে ব্যাঙের ছাতার মতো হাসপাতালের জন্ম নিলেও , ভুল চিকিৎসা কিংবা চিকিৎসার অভাবে স্বর্ণাদের মতো শিশুর মৃত্যু হয় । যখন নির্মলেন্দু দা তার ক্ষোভ ঢেকে রাখতে না পেরে লিখেন, মা স্বর্ণা-তুই আমাদের ক্ষমা করিস না। সত্যি বলছি তখন আর ইচ্ছে করে না লিখতে । , এই খানে , আরো অনেক কিছু হয় কিন্তু আবার এই খানেই ভালো কিছু ও হয় ।
লিখছি ওই কারণেই , কারণ , যখন একটা নরপশু ধর্ষণ করলে , হাজারটা মানুষ জেগে উঠে , তাই । লিখছি এই কারণেই , যখন কোন যুবক অফিস শেষ করে রাস্তায় দাড়িয়ে বাবা-মেয়ের হত্যার বিচার চায় ওই কারণে । লিখছি এই কারণে , যখন দেখি অনেকেই পরিবর্তন হতে শুরু করেছে , তখন আশা জাগে । সত্যি কোন রিকশা ওয়ালা ভুল করলে আরেকজন যখন তাকে ভূল ধরিয়ে দেয় , তখন আশা জাগে না এই দেশও পরিবর্তন হবে । তবে এখনো কিছু সমস্যা রয়ে গেছে । আর হয়তো এই গুলো থেকেই যাবে । অপরাধীর সংখ্যা খুব বেশী না । চাইলেই ওদের চিহ্নিত করা যায় , চাইলেই ওদের শাস্তির আওতায় আনা যায় ।
ধর্ষকের সংখ্যা অল্প কিন্তু দর্শক অনেকেই আছে ,আমাদের সমস্যা টা ওই খানেই । অনলাইনে ছেলেটি যখন মেয়ে স্ক্যান্ডাল ভিডিওটি শেয়ার দেয় , আমরা হুমড়ি খেয়ে পড়ি , দুই দিনেই ছড়িয়ে যায় দেশ বিদেশ সব । কিন্তু কেন ? এতো পৌছাশিক আনন্দ আমাদের কোথা থেকে আসে ? ইচ্ছের বিরুদ্ধে
জোরপূর্বক কোন প্রকার কাজ করাই একপ্রকার ধর্ষণ । সেটা যদি স্বামী তার স্ত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে কিংবা স্ত্রী স্বামীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে যেটাই হোক , দুটাই ধর্ষণ । কিছুদিন আগে একটা লিখায় লিখেছিলাম , আমরা যে ফুলটাকে ছিড়ে রাস্তায় ফেলে দেই , ওটাও ধর্ষন !! হ্যাঁ আবারও বলছি ওটা ধর্ষণ , আপনি ফুলকে ধর্ষণ করছেন , আপনি প্রাকৃতিকে ধর্ষণ করছেন । ওটা কথা বলতে পারে না । আর মানুষ পারে , পার্থক্য এই খানেই । ফেইসবুকের পাতা জুড়ে ধর্ষণের খবর , শেষ এক সপ্তাহে মোট মিলিয়ে ১১ টির ও বেশী ধর্ষণের খবর পড়েছি । এক বিশাল কাজ করেছি । কারণ আমি খবর পড়ি । পড়েছি , জেনেছি , এমন কি বন্ধু-বান্ধব , যারাই ছিলো কিংবা কাছের আছে সবার সাথে বিষয়টি শেয়ার করেছি । কিন্তু অদ্ভুদ বিষয় হলো , সব সময়ই আমি ধর্ষক নয় ধর্ষিতার নামই নিয়েছি । ওই কলেজের , ওই ইউনিভার্সিটির , ওই গ্রামের , ওই মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে । বাহ , ধর্ষিতাকে ধর্ষণ করে ছেড়ে দিলাম আমিও , তারা শারীরিক আর আমি কথায় ।এইটা আমার দোষ না , আমাদের নিউজ পেপার , আমাদের টিভি চ্যানেল তাদের দোষ । কারণ তারা যখন খবর পড়েন , কিংবা লিখেন তখন তারা ধর্ষিতাকে নিয়ে লেখেন , ধর্ষিতার নাম ধরে লিখেন । কিন্তু কেন ? খবর হবে অপরাধীর নাম দিয়ে । এই কারণেই আমি হিটলারকে ভালোবাসি । কারণ তার উক্তি ছিলো , খবরে আসার দুটি উপায় , হয় অনেক বেশী ভালো কিছু করো , তাহলে খবরে আসতা পারবা , না হলে শহরে বোমা মারো , তাতেও খবররে প্রথম পাতায় স্থান পাবা । কিন্তু আমাদের সাংবাদিক বন্ধুগন , আরো একটি সেক্টর যোগ করলেন , ধর্ষণ হও তাহলেই খবরের প্রথম পাতায় , অথবা প্রথম বলায় স্থান করে নিতে পারবা !! সাংবাদিক পেশাকে সম্মান করেই বলছি , নিউজ করার ধরন পরিবর্তন করুন । ধর্ষিতা নয় নিউজ হবে ধর্ষকে নিয়ে । নিউজ হবে , ধর্ষকের নাম ধরে । যাতে সমাজ , দেশ , দেশের মানুষ তাদের চিনতে পারে । আর সরকারের প্রতি অনুরোধ , ধর্ষকের শাস্তি হবে , উন্মুক্ত খোলা স্থানে মৃত্যুদন্ড , যাতে তার মৃত্যু দেখে পরবর্তীতে কেউ এমন কাজ করার সাহস না পায় , একই সাথে ধর্ষণের বিচার সঠিক ভাবে পর্যালোচনা করে , করা হোক , যাতে আবার এটা কেউ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে ।
মাওলানা সাহেব দের সম্মান করেই বলবো , মেয়েরা কখনই তেতুল নন , আর আপনিও গুণ পোকা নন । সুতরাং মানুষকে মানুষ বলতে শিখুন । কিছুদিন আগে এক ছোট ভাই , পোষ্ট করেছে , নারীর পোষাক নাকি নারীর ধর্ষন হওয়ার কারণ । ভাই তোমার প্রতি সম্মান রেখে বলবো , জানি তুমি কোরআন পড়েছো , আরো একবার ভালো ভাবে পড়ো , যেহেতু , আমাদের মাতৃভাষা , বাংলা , সুতরাং তুমি তাফসির করে পড়ো , যাতে বুঝতে সুবিধা হয় , তোমরাই আগামীর বাংলার মানুষ , আমি তুমি কি পেয়েছি বিষয় সেটা নয় , আমি তুমি কি দিয়েছি ? আমি তুমি , চলে যাচ্ছি , কিংবা চলে যাবো , কি রেখে যাবো , কেমন রেখে যাবো , সেটা বড় বিষয় । কোরআনে যখনই পর্দার কথা বলা হয়েছে , তার পাশা পাশি , তোমার দৃষ্টির হেফাজত , তোমার গোপনীতার হেফাজত করতে বলা হয়েছে । তাহলে কেন ? বুঝলাম মেয়েটা শর্ট জামা পড়ে বের হয়েছে , তাই বলে তুমি ও তোমার দৃষ্টি ছেড়ে দিবে ? ছেড়ে দিবে তোমার গোপনীয়তা ? যা তাকে থাবা দে , কেন ভাই তোমার এতো মাংসের লোভ কেন ? পোষাক নয় , ধর্ষণ আমাদের চারিত্রিক সমস্যার কারণে হয় । ধর্ষণ কিছু কুলাঙ্গার বাবার জন্য হয় , যারা ধর্ষক ছেলের পক্ষ নিয়ে কথা বলে । ধর্ষক কিছু ভিত্তবান কুলাঙ্গারদের জন্য হয় । সত্যি বলছি এই সমাজের সবাই খারাপ না । সব ভিত্তবানরা খারাপ না । দৃষ্টি ভঙ্গিটা একটু পরিবর্তন করো ।
টাইটেলটি দেওয়ার একমাত্র কারণ , সত্যি আমি ধর্ষক নই । কিন্তু তার প্রমাণ কি ? ধর্ষকের শরীরে তো লেখা ছিলো না যে সে ধর্ষক ? না আমার শরীরে লেখা আছে আমি ভালো মানুষ , বাসে কিংবা রাস্তায় বের হলেই এই ভয়টা হয় , কখন কে কি ভেবে বসে ? কখন কে বলে তার দিকে আড় চোখে তাকিয়েছি । কেন আমাকে এই ভয় নিয়ে বাচতে হবে ? আমিতো স্বাধীন , ঠিক একই ভাবে স্বাধীন ওই মেয়েটিও , যাকে কিছু নরপশু ছিড়ে খেয়েছিলো । কিন্তু কেন , এই দেশে রাতে রাস্তায় বের হওয়া কিংবা রাতে রেস্তরায় যাওয়া যদি স্বাধীন না হয় , তাহলে রাতে ধর্ষণ করা স্বাধীন ? অপরাধকে পশ্রয় দিলে একদিন অপরাধী আপনার উপর আপনার পরিবারের উপর আক্রমণ করবে । কমিউনিস্ট এক লেখকের একটা কবিতা ছিলো এমন
“ তারা যখন মুসলমানদের হত্যা করছিলো ,তখন আমি কিছুই বলি নি ,
কারণ আমি মুসলমান নই ।
তারা যখন লেখকদের জবাই করছিলো , তখনও আমি কিছু বলিনি ,
কারণ আমি লেখক নই ।
কিন্তু তারা যখন আমায় হত্যা করতে এসেছে আমি অনেক চিৎকার করেছি ,
ততদিনে আমার ডাক শুনার মতো কেউ বেচে নেই ” ।।
এমন অবস্থার সৃষ্টি না করে , এখনই এর বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান । বিশ্বাস করুন আমি ধর্ষক নই । এমন একটা কাপা সুর ভেজে উঠার আগেই জেগে উঠুন ।
এমন অবস্থার সৃষ্টি না করে , এখনই এর বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান । বিশ্বাস করুন আমি ধর্ষক নই । এমন একটা কাপা সুর ভেজে উঠার আগেই জেগে উঠুন ।
ReplyDelete