প্রসংঙ্গ সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্য..


পর্ব-০১
জয় তেতুলের জয় , জয় রাতের আধারের জয় ।
এই দেশে ভাস্কর্য থাকলে সমস্যা , এই দেশে প্রেম করলে সমস্যা , এই দেশে সুধ দেওয়া জায়েজ , এই দেশে ঘুস খাওয়া জায়েজ , এই দেশে ধর্মকে পুজি করে ব্যবসা কিংবা ক্ষমতায় যাওয়া জায়েজ । জয় আমার সোনার বাংলার জয় ।
হুমায়ন আজাদের কয়েকটি লাইন ...
মসজিদ ভাঙে ধার্মিকেরা, মন্দিরও ভাঙে ধার্মিকেরা, তারপরও তারা দাবি করে তারা ধার্মিক, আর যারা ভাঙাভাঙিতে নেই তারা অধার্মিক বা নাস্তিক।.......... হুমায়ুন আজাদ
সারা দিন , নেশা , আর রাতের আধারে নারী শরীরের উপর ঝাপ দেওয়া , আর মুখে আমি মুসলিম , আমি ধার্মিক বলে চিৎকার করে বেড়ানোর অভ্যসটা আমাদের আজও গেলো না ।
পর্ব : ০২
গত কাল সারা দিন একটা অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় ছিলাম । গেইট থেকে কনফারেন্স রুম পর্যন্ত যাওয়ার জন্য ৭ বার পুলিশী জিজ্ঞাসার মুখে পড়তে হয়েছে । একটা সময় মনে হলো না , আমি সুপ্রিম কোর্ট নয় , আমি আছি দেশের কেন্দ্রীয় কারাগারের ভিতর , নাকি পুরান ঢাকার কারাগারটাকে এই সুপ্রিম কোর্ট প্রঙ্গনে স্থানান্তর করা হয়েছে ? না তেমন কিছুই না । এই খানে রাতের আধরে , তেতুল পক্ষের নির্দেশে , আমাদের সরকার , আমাদের প্রশাসন একটা নারীকে ধর্ষণ করেছে , তার পর তাকে কোথায় যেন তুলে নিয়ে গেছে । হ্যাঁ তাই হয়েছে , আপনি বলছেন না , নারী নয় একটি মূর্তি কে সরানো হয়েছে ?
এখন আমার একটা পোকলা দাতের হাসি হাসতে ইচ্ছে করছে , কেননা আমরা এখনো ভাস্কর্য আর মূর্তি এই দুইয়ের পার্থক্য বুজি নাই , আচ্ছা যাই হোক একবার বলুন তো এই খানে কি কেউ এসে কখনো পূজা দিয়েছে ? নিশ্চই আপনার উত্তর হবে না , তাহলে কিভাবে এইটা মূর্তি হলো ? সব থেকে বড় কথা , যে দেশে বুদ্ধীজীবিরা , খোলা স্থানে পস্রাব বন্ধের জন্য , টয়লেট আর মসজিদকে এক করে ফেলে , ওই দেশের মানুষ ভাস্কর্য আর মূর্তি এই দুইয়ের পার্থক্য বুজবে কি করে ?
নারী মূর্তি = নারী
রাতের আধারে তাকে অপসারণ করা তার উপর জোর করা = তাকে ধর্ষণ করা .
ধিক্কার ওই সকল মানুষদের যারা রাতের আধারে কাজ করতে পচন্দ করে ,.।
পর্ব - ০৩
হুজুর সাহেব বড় বড় গলায় , বলছেন , মূর্তি(ভাস্কর্য) সরানোর কথা , যাই হোক ওনি বিষয়টি জানেন না । তবে তিনি সুধ আর গুষ নিয়ে কথা বলছেন না , কারণ ওখানে ওনার রিজিক নিহিত আছে । তিনি ওইটা বলবেন না কারণ ওখান থেকে তার একটা ভাগ পকেটে আসে , গরিবের বাড়ি দাওয়াত খেলে ওনার হাদিয়া পকেটে আসেনা , আমার দেখা আছে ওই সব তেতুল বাজ দের যারা কিনা , জায়নাজা পড়ানোর পর দাড়িয়ে থাকে টাকার জন্য। দেখা আছে ওই সকল তুতল বাজ দের যাদের কে সমাজের উন্নয়নের জন্য গ্রামের ছেলেরা কোন অনুষ্ঠান করলে দাওয়াত করলৈ আসে না , কিন্তু ঠিকই সুদ খোর লোকদের সাথে নিয়ে সারা দিন ঘুরে বেড়ায় । চমৎকার আমাদের ধর্ম ব্যবসা । আমার দেখা আছে ওই সকল আমলা দেরকে যারা ধর্মকে পুজি করে ভোট যুদ্ধে নামে । এই দেশে কোন রাতের আধার হয় নি , এই দেশে ৫/৬ই মে বলতে কোন রাত হয়নি । এই দেশে কোন ঘুষ খোর নাই । রফিক আজাদের মতো বলতে ইচ্ছে করে এই সব নাটক বন্ধ কর , নাহলে কবরের জয়গা টাও পাবি না ।
প্রসঙ্গ - ০৪
সুপ্রিম কোট এরিয়া , অনুষ্ঠানের বিরতি , বের হলাম একটা লাল চায়ে চুমুক দিতে তার সাথে একটু নিকোটিনের ধোয়া গিলতে । দোকানী নেই , একটু দুরে দেখলাম দোকানী গাছের আড়ালে দাড়িয়ে আছে , কাছে যেতেই বললো , বাই এই দিকে আইসেন না , মারামারি হচ্ছে , আমি এগিয়ে গেলাম , কোথায় ? উত্তরে বললো , আমি জানিনা , পুলিশ বলেছে । আপনি জানেন না দেখেন নাই , তারপরও পালাচ্ছেন কেন ? পুলিশ বলছে , এই দিক ওই দিক তাকালাম কিছুক্ষণ হাটলাম , কই না কোথাও মারা মারি নাই । চিলে কান নিয়ে গেছে , এই বলে স্বর তুলে দেই আর সবাই ছুটতে শুরু করলো , এই প্রক্ষিতে একটা ঘটনা মনে পড়লো, বেশ কয়েকদিন আগে বাজারে যাওয়ার পর , হঠাৎ সবাই দৌড় আরম্ভ করলো , সুর একটাই আসচে , কয়েক মিনিটেই বাজার ফাকা , আমি থ হয়ে দাড়িয়ে রইলাম , ইচ্ছে কে আসছে একটু দেখবো , একটু পর একটা লোক এসে বললো দৌড়ান আসছে , আসছে তো , প্রশ।ন কে আসছে , উত্তর : জানি না , তবে আসছে । বেশ কিছুক্ষণ দাড়িয়ে রইলাম , কেউ আসলো না । আবার এক এক করে সবাই আসতে শুরু করলো , একজনকে জিজ্ঞান করলাম , কেন দৌড় দিলেন , উত্তরে সে বললো , বলছে আসছে , তাই । জোরে একটা হাসি দিলাম , কি অদ্ভুদ আমরা , আসছে বললো আর ওমনি দৌড় শুরু করলাম ।
পর্ব - ৫
প্রশ্ন প্রসাশন কিংবা সরকার মহলের কাছে ..
ভাস্কর্য সরাবেন সরান , তবে তার জন্য রাতের আধারকে কেন বেচে নিলেন ? এতে করে কি প্রমাণ করছেন ? আপনারা রাত ছাড়া কোন কাজ করতে পারছেন না , তাহলে কি এখনো আমাদের ভিতর পাকি দের অস্বিত্ব রয়েই গেলো ? যেকিনা রাতের আধারই মামলা , হামলা, সব করবো !!?
বি:দ্রা : এই দেশে চুমু খেলে দোষ , কিন্তু ঘুষ খেলে নয় । এই দেশে ভাস্কর্যে সমস্যা , কিন্তু ধর্ষণে নয় । চলুন আমরা সব ভেঙ্গে ফেলি , লেখকের কলম কেড়ে নেই , সব বন্ধ করে দেই , চালু করি ধর্ম ব্যবসা । এক এক করে গড়ি তুলি মাজার , দেওয়ানবাগী, কুতুববাগী , সুফি বাদী , আরো কতো বাধিী , টয়লেট বাদী । আবার শুরু হোক অন্ধকার যুগ , কবি কবিতা লিখবে না , লেখক প্রবন্ধ লিখবে না , শিল্পী ছবি আকবে না , আর কোন চলচ্চিত্র হবে না , আর কোন গান হবে না , নৃত্য হবে না । সবাই ঘুষ খাবো , সুধ খাবো , গরিবদের আরো গরিব করে দিবো ,আর বড় লোকেরা , টাকার পাহাড় গড়ে তুলবো । আহ কি শান্তি ।

Comments

Popular posts from this blog

প্রবাহমান জীবন ও কিছু কথা!

"ফরেস্ট গাম্প " একটি অনুপ্রেরণার গল্প, একটি মৃত প্রাণকে তাজা করার সিনেমা

পানাম নগর, আমার এবেলা ওবেলা