স্মৃতির কেনাকাটা... আমার সিনেমা বানানোর গল্প (পর্ব-০১)
আজ যা হচ্ছে কাল তা অতীত , আর অতীতের কিছু বিষেশ মূহর্তের ঠাই মিলে স্মৃতির পাতায় ।
দেশের জলবায়ুর অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে , বর্ষা শেষ সময়েও বৃষ্টি হচ্ছে । একটু পর পর বৃষ্টি হয় , থেমে থেমে বৃষ্টি আবার কখনও বা মুষলধারে বৃষ্টি নামছে । অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে ঠিক হলো দিন তারিখ । কয়েক ধপায় আলোচনা হলো । আর্টিস্টদের রিহার্সেল করানো হলো দুই দিন । টিমের অন্য সবার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হলো । নিজের ভিতর একটু অন্য রকম ক্রিয়া কাজ করছে । একটা ভিন্ন অনুভতি । স্বপ্নের আরেক ধাপ এ উঠতে চললাম ।
হাতে সময় নেই , স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী ফ্রপ্স কিনতে হবে । কম নয় , অনেক গুলো , এই বার শুরু কেনা কাটার জন্য এদিক ওদিক ছুটাছুটি । সাথে আছে এই ফিল্ম এর প্রধান সহকারী পরিচালক , সব থেকে কাছে মানুষটি , ভাই বলি বন্ধু বলি , সব কিছুই বলা যায় । সারাদিনের ভাবনা শেষ , বাসা থেকে লিস্ট করে নিয়ে আসলাম ।বসে আছি টিএসসির চত্বরে অন্যরা সবাই আসছে । দু-একজন চলে এসেছে । কথা চলছে সেই সাথে স্ক্রিপ্টএর সাথে লিস্ট মিলিয়ে দেখা হচ্ছে , কোন কিছু বাদ গেলো কিনা । না ঠিক আছে , সবই লিস্টে উঠেছে , যা দু-একটা বাদ আছে সে গুলো ও বাসায় আছে বলেই লিস্টে জায়গা পায়নি ।
দু দিন পরই পুজা , ঢাকার রাস্তায় অনেক মানুষ , মার্কেট গুলোতেও ভিড়ের কমতি নেই । সবাইকে টিএসসি চত্বরে বসিয়ে আমি নিউমার্কেটে । সাথে আছে সেবক , ফিল্ম এর প্রধান সহকারী পরিচালক আর কাছের আরেকজন , ছোট ভাই বিনয় । এই দিক ওই দিক ঘুরে দু-হাত ভর্তি করে নিলাম , যে কেউ দেখলে ভাববে নতুন সংসার এর কেনাকাটা করছি , ছোট বাটি থেকে কেতলি , কাপ সব কিছুই কেনা হলো । এমন সময় সেবকের ফোনে একটা ফোন আসলো , কোথায় আছে এই প্রশ্নের উত্তরে যখন সেবক বললো নিউমার্কেট , তখন ওপাশ থেকে জানতে চাইলো , পুজার কেনাকাটা করছে .? ওর উত্তর টা ছিলো , না শুটিং । সবাই যখন পুজার কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত আমরা তখন সিনেমা বানানোর জন্য ব্যস্ত । হাত ভর্তি কেনা কাটা করে , বাসায় ফিরা হলো রাত ১২টার ও পর । ঢাকার রাস্তা অনেকটা ফাকা হয়ে গেছে ততক্ষণে ।
রিকসা চলছে , অনেক গতিতে , রিকসার ড্রাইভার মনের সুখে গান গাইছে । ঠান্ডা বাতাস আমি রিকসায় বসে আছি একা , ওরা দু-জন ইনির্ভাসিটির হলে থেকে গেলো । অনেকটা ভালো লাগছে , এই জীবনে অনেক কেনাকাটা করেছি , কিন্তু এইবার ই ভিন্ন এক অনুভতি ছিলো মনে । একসাথে নিজের ফিল্ম , আবার নিজের লেখা গল্পে , স্বপ্নের আরেকটা সিড়িতে পা রাখা । সব মিলিয়ে আমার অবস্থা তখন সেই কিশোরী বালিকার সকল নিষেধ ভঙ্গ করে সাঝ সকালে শিউলী ফুল কুড়াতে যাওয়ার মতো ।
স্মৃতির পাতায় যোগ হলো আরেকটি অধ্যায় , হয়ে গেলো স্মৃতির কেনাকাটা । এখন বাকি , লাইট , সাউন্ড ক্যামেরা , Action....... আসছে পরবর্তী পর্বে ...............
কৃতজ্ঞতা : টিমের সকলের প্রতি । সবার নাম উল্লেখ্য করা সম্ভব হচ্ছে না । অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো তোমাদের প্রতি....... তোমরাই আমার পরিবার... আমার কাছের মানুষ ।
Comments
Post a Comment