|
ফিল্ম এর অফিসিয়াল পোষ্টার |
লাইট , সাউন্ড ক্যামেরা , Action ,
শুরু হয়ে গেলো , অভিনয় , ডায়লগ দেওয়া , একটু ভুল হলেই , "কাট"
আবার নতুন ট্যাক । শুনেছি , দেখেছি , কিন্তু বলা হয় নাই কখনও , এইবারই প্রথম , আমি Action বললেই শুটিং শুরু হবে । ভিতরে একটু ভয় কাজ করছে । তাতে কি বিশ্বাস আছে আমি পারবো । গতরাতে অনেক সময় নিয়ে বৃষ্টি হয়েছে । এখন অবশ্যই নাই । প্রথম চিন্তায় পড়ে গেছি , শুটিং হবে কিনা । সারা রাত না ঘুমিয়ে ভোর ৫টায় বাসা ত্যাগ করলাম । গাড়ী চলে গেলো , সাবইকে নিতে , আমি সাথে সহকারী পরিচলক সহ সিএনজিতে করে শুটিং স্পটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করলাম । এক এক করে সবাই চলে এলো , স , একটা শর্ট ইনডোরে নিয়ে তার পর চলে যাবো আউটডোর । ওখান থেকে শেষ করে আবার ইনডোর । একদিনেই শুটিং শেষ করবো । সেই অনুযায়ী সব সাজানো হয়েছে । আর্টিস্টদের মেকআপ মাখাচ্ছে ,
|
নায়িকাকে মেকআপ দেওয়া হচ্ছে |
|
বড় ভাই এবং প্রিয় মানুষটিকে যখন মেকআপ দিচ্ছে |
মেকআপ দেওয়া শেষ , এর মধ্যে সেট প্রস্তুত । কাউন্ট ডাউন শুরু…জিরো…ওয়ান…টু…থ্রি…
লাইট…সাউন্ড…ক্যামেরা…Action…
তখন সময় সকাল ৯টা , শুরু হয়ে গেলো শুটিং , কেউ লক্ষ্য করুক আর না করুক আমি নিজেই লক্ষ্য করলাম Action শব্দটা আমার মুখ দিয়ে একটু জোরেই বের হয়েছে । হয়তো বা নিজেকে শক্তি দেওয়ার জন্য এইটা হলো । তারপর নিজে নিজেই একটু হেসে নিলাম ।
|
প্রথম ধাপের শুটিং |
খুব বেশী সময় নেয় নি , প্রথম ধাপের শুটিং শেষ , প্রধান সহকারী পরিচালকে আগে থেকেই সব বলা ছিলো । তার সাথে মনের এবং কাজের দুটোতেই মিল আছে বেশ । সে চিৎকার দিয়ে বললো ইউনিট মুভ । আমরা এখন আউটডোর শুট এ যাবো । গাড়ি রেডি .. যাদের যাদের প্রয়োজন আছে কেবল তাদের কেই নেউ হবে । বাকিরা , হাউজেই থাকবে । যে যার মতো গাড়িতে উঠে গেলো ,উদ্দেশ্য , বিরুলীয়া , গাড়ি পৌছে গেলো । আগে থেকেই বলা ছিলো , পুনরায় আবার শুটিং শুরু , ড্রেস , মেকাপ , সেট সব প্রস্তুত হচ্ছে ..এই খানে আমরা কোন কোন শট নিবো তা বুঝিয়ে দিলাম , প্রধান সহকারী পরিচালক সহ সকলকে ।
|
শট এবং দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার সময় ফ্রেম বন্ধী করলেন , প্রিয় ফটোগ্রাপার অভি ভাই । |
পুনরায় লাইট ,ক্যামেরা , সাউন্ড Action .... শুরু হলো , শুটিং ....
বিরুলিয়ার কিছু ছবি .......
না ওখানে গুপ্ত ধন নেই , কিন্তু তার থেকেও বেশী কিছু আছে ।
|
ওইযে ওই দেখো , ওখানেই হবে তোমার আমার বাস.........না এমনটা বলা হয়নি , কি বলা হয়েছে তা আমার কানে আসে নি .. |
|
সঠিক স্থানে সঠিক কিছু বসানোর চেষ্টা চলছে.... |
|
তোমায় নিয়ে ভেসে যাবো দুর অজানার দেশে.......... |
|
চলনা সখী আরেকবার হাটি তোকে নিয়ে .. সেই কাঠের সাকুর উপর দিয়ে.... |
তৃপ্তি অতৃপ্তির পর্ব শেষে এই বার যাবার পালা , এই পর্বে আমাদের সাথে পকৃতিও অনেক খেলেছে , একটু পর পর বৃষ্টি , গাড়ির শব্দ , অনেক গুলো সমস্যা , তারপরও শেষ হলো শুটিং । কেউ একজন বলে উঠলো ইউনিট মুভ । যাহা চেয়েছি তাহা পাইনাই হয়তো , কিন্তু যাহা পাইয়াছি তাহাই অনেক বড় ছিলো....
|
শুটিং শেষে ফেরার পথে , পুনরায় ফ্রেম বন্ধী |
ফিরে আসলাম , আবার ব্যস্ত নগীরর বুকে ... ইট পাথরের দেওয়ালের মাঝে । আউটডোর আরো কিছু শট বাকি আছে আর সে গুলো নিতে হবে রাস্তায়, হাউজের সামনে । কিন্তু এইতো সমস্যা , মানুষকে কন্ট্রোল করা হচ্ছে শুটিং এ সব থেকে বড় সমস্যা ।যাই হোক সব মিলিয়ে ওই দৃশ্য নেওয়া শেষ , এখন যাবো খাবার এর বিরতীতে । তখন বিকাল ৪টা , বিরুলীয়াতে একটু সময় বেশী লেগে যায় । মাথায় তখনও চিন্তা , কারণ এখনও বেশ কিছু দৃশ্য বাকি । মনে মনে এই সব চিন্তা , মুখে জোর দিয়ে বলছি , আজকের মধ্যেই শুটিং শেষ , এই ছবির জন্য , আরেক দিন সেট বসাতে পারবো না । যাই হোক , এইবার খাবার বিরতি . এখন সবাই খেতে ব্যস্ত সময় তখন ৪টার উপরে ।
|
চলছে খানা পিনা ...... |
এই দিক ওই দিক , খাবার বিরতির পর পুনরায় শুরু হলো শুটিং । শেষ মুহর্ত্বে এসে হলো নতুন এক ঝামেলা । হাউজটি আমাদের ভাড়া করা ছিলো না, পরিচিত এক ভাইয়ের হাউজে শুটিং , একটা কারণে উনি বিগড়ে গেলেন , আর খুব গরম হয়ে বলে দিলেন আর শুটিং করা সম্ভব না । আমরা যেন ইউনিট , মাল পত্র গুছিয়ে চলে যাই । সবাই হতাশ, এখন কি করবো ? হাউজটা পেয়েছি সিনেমাটোগ্রাফার এর মাধ্যমে , সিনেমাটোগ্রাফার বড় ভাই বললেন আমার কিছু করার নেই , আমি তোমাকে আরেকদিন ব্যবস্থা করে দিবো অন্য কোথাও, আজকের মতো প্যাক আপ করো , আমার মাথায় তখনও ঘুরছে না আরেক দিন না , আমি আজকের মধ্যেই শুটিং শেষ করবো । যাই হোক করা করা যায় , সেটা পরে , আপাতত প্যাডে যাই , ওখানে একটা দৃশ্য আছে সেটা শেষ করি তারপর ভাবা যাবে । বৃষ্টি তারপর এই ঝামেলা , তার উপর এটাই প্রথম ....নিজের পরিচালনায় । সব মিলিয়ে যা হচ্ছে সব কিছু থেকেই শেখার আছে । প্যাডে চলে গেলাম , সেট রেডি , শুট শুরু ।
|
আমি প্রস্তুত , তবে হয়ে যাক শুরু , এমনটাই ভাব ছিলো নায়কের । |
প্যাডের দৃশ্য শেষ দিকে , কিন্তু কি করা যায় ..? তবে কি এই খানেই শেষ ? আমি সহকারী পরিচালক , সহ স্থির চিত্র গ্রাহক , সবাই আলোচনা করছি , বাকী দৃশ্য গুলোর কি করবো ? তখন রাত ১০টা বাজে । এমন সময় জুসি ( সেও অভিনয় করেছে এই ফিল্মে ) বললো যে তাদের বাসায় শূটিং করতে । জিজ্ঞাস করলাম সমস্যা হবে নাতো ..? উত্তরে সে বললো না হেব না , আমাদের চিন্তিত দেখে সে বাসায় কথা বলেছে , কোন সমস্যা নাই যেতে পারি । তীব্র খরার মাঝে ফসলি জমির উপর বৃষ্টির পানি পড়লো । ইউনিট জুসিদের বাসায় । যে ভাবেই হোক রাত ১২ টার আগে শুটিং শেষ করতে হবে , কারণ এইটা অন্যের বাসা । তাছাড়া একটা আবাসিক এরিয়া । সবাই একটু তাহাহুড়ো করছে , সেট রেডি, দৃশ্য শুরু , ক্যামরা চলছে ।
ব্যস্ত সময় .... আর এই দিকে নায়ক নায়িকা মধুর আলাপ করছে !! নাহ এমনটা না , তারাও ডায়লগ দেখে নিচ্ছে যাতে করে ভুল না হয় ।
|
প্রধান সহকারী পরিচালকে দৃশ্য বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে । |
সকল ঝড় ঝাপটা মাঝেও শেষ হলো আমাদের শুটিং । ইউনিট প্যাকআফ । জীবনের প্রথম আমি পরিচালকের আসনে । অনুভুতিটা বেশ ভালোই ছিলো । অনেক কিছু শেখার ও ছিলো । যখন আমরা গাড়ি তে ইঠবো তখন সময় রাত ১টা .. বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় ২টা বেজে গেছে , এলাকার সকল হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় না খেয়ে ঘুম । একটা শান্তির ঘুম । দেখতে দেখতে সময় চলে গেলো । সবার সামনে এখন ট্রেইলর ও দিয়ে দেওয়া হয়েছে ।
যাদের ধন্যবাদ না দিলেই নয় : প্রথমত ইউনিটের সবাইক ধন্যবাদ । আলাদা করে , জুসি কে , বিপদের সময় এতো বড়ো সাপোর্ট দেওয়ার জন্য । Najib tareque স্যার কেও ধন্যবাদ , আপনার বাড়িতেই প্রথম দিকের দৃশ্য গুলোর শুট হয়েছে । সত্যি আমাদের টিম টা বেশ ভালো ছিলো.। না হলে একদিনে কোন ভাবেই সম্ভব হতো না । সবাই নিজের অবস্থান থেকে তার সর্বোচ্চটা দিয়েছে । আবার সবাইকে ধন্যবাদ ।
Comments
Post a Comment