আমার দেখা সেরা ছবি : “A Beautiful Mind "




লেকাচার চলছে , বিশ্ববিদ্যালয়ের  এক জন অধ্যাপক জীবনের লক্ষ নিয়ে কথf বলছেন , শিক্ষার্থীদের মাঝে বড় বড় স্বপ্নের কথা বলছেন । শুরুটা ঠিক এইভাবেই হয়েছিলো । আমি বলছি “A Beautiful Mind ছবির কথা বাংলায় অর্থ করলে দাড়ায় একটি সুন্দর মন । আমার দেখা সেরা অণুপ্রেরণা মূলক একটি ছবি । ২০০১ এ ছবিটি মুক্তি পায় , এবং একই সালে ছবিটি চারটি ক্ষেত্রে একাডেমি পুরষ্কার জিতে - সেরা ছবি, সেরা পরিচালক, সেরা পরিবর্তিত চিত্রনাট্য এবং সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী। পরিচালক রন হাওয়ার্ড , ১৯৯৮ সালের পুলিৎজার পুরষ্কার পাওয়া সিলিভিয়া নাসার একই নামের উপন্যাস অবলম্ভনে ছবিটি নির্মান করেন । সিলিভিয়া নাসার উপন্যাসটিও বেস্ট সেলিং উপন্যাসের খোতব অর্জন করে । সিলিভিয়া নাসা উপন্যাসটি লিখেন লোবেল পুরস্কার বিজয়ী গনিতবিদ জন ণ্যাশের জীবন থেকে ।
ছবির মুল চরিত্র মানে জন ন্যাশের চরিত্রে অভিনয় করেন অস্ট্রেলীয় অভিনেতা ও গায়ক রাসেল ক্রো । অ্যালিসিয়া নামক মেয়েটি জন ন্যাশ ( রাসেল ক্রোর স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেন , আরো অনেক পার্শ্ব চরিত্র রয়েছে ছবিটিতে ।
জন ন্যাশ , পিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন গনিতবিদ্যার উপর । তার চিন্তায় সব সময় গানিতিক সুত্র সমূহ ঘুরপাক খায় । হোস্টেল রুমে একাই থাকেন , আর সেইখানেই তার কল্পনার মানব চালর্স হারম্যান এর উদ্ভব হয় , । যার কোন বাস্তব রূপ ছবির শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি । জন ন্যাশ তার চলা ফেরা কাথা বার্ত্ সব কিছুতেই যুক্তি / গনিতিক সংঙ্গা খুজতেন , এই নিয়ে তার সহপাটিরা তাকে পাগল ভাবতেন । অনেক্ই রীতিমত তার সামনেই তাকে পাগল বলতেন । সব জায়গায় তাকে ছোট করায় ব্যাস্ত থাকতো তার সহপাটি মার্টিন । আর জন ন্যাশ তার কল্পনার বন্ধু হারম্যান এর সাথে তার জীবন কাহিনি শেয়ার করতো । সবাই যখন ক্লাস করতো সে তখন কবুতর কিংবা ফুটবলার টিম নিয়ে গানিতিক সংঙ্গা আকতো , তার রুমের জানালার গ্লাসে সেই চিত্র কর্ম গুলো করে রেখেছেন , তার লক্ষ সে একদিন অনকে বড় হবে । নিয়মিত ক্লাস করার নিয়ে জন ন্যাশের ছিলো এক ভিন্ন চিন্তা , সে মনে করে নিয়মিত ক্লাস করলে মানুষ তার সৃষ্টিশীল চিন্তা হারিয়ে পেলে , প্রতিদিনের ক্লাস করে দেয় তার চেতনাকে নিষ্প্রান । সবাই ক্লাস করছে , তাদের প্রজেক্ট সমুহ জমা দিচ্ছে , কিন্তু জন ন্যাশ পড়ে আছে তার নিজের চিন্তা নিয়ে , একদিন তার প্রিন্সিপাল তাকে ডেকে , তার এই অবনতির কথা জানান , আরো জানান তার এই খাম খেয়ালি পনার জন্য সবাই তার থেক এগিয়ে যাচ্ছে আর সে পিছে পড়ে যাচ্ছে , একটি রুম দেখিয়ে প্রিন্সিপাল বলে দেখছো ওই সব কি ? ( ওই রুমে প্রফেসর ম্যাক্স নামক একজনকে সবাই কলম দিচ্ছে,সেই সাথে অভিন্দন ) এই সব হচ্ছে সেই কলম যে গুলো সংরক্ণ করার হয় ডিপার্টমেন্টের তার জন্য যে কিনা কিছু করে দেখাতে পারে । এই সবের প্রতি লোভ জাগে জন ন্যশের , বাসায় এসে কিছুটা অনুতপ্ত হয় , তখন উদয় হয় তার কল্পনার বন্ধু হারম্যান এর , চলে যায় ক্লাবে, ওখানে ঘটে আরেক ঘটনা , ওখানেও জন ন্যাশ কে অপমানিত করে তার সহ পাটিরা, ওখান থেকে সে রুমে ফিরে আসে । একটি গবেষণা পত্র তৈরি করে , আর সেটা তার অধ্যাপক কে দেখানোর পর উনি তাকে হুইলার ল্যাব এর মিট ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য নির্বাচন করে , এবং সেই সফরে তার সহযোগী হয় তার দুই বন্ধু সোল ও বেন্ডার । এই যাত্রায় জন সফল ।
জন এখন হুইলার ল্যাব এর গবেষক দলের প্রধান , তার গানিতিক কোড আয়ত্ত করার ক্ষমতা ছিলো বেশ ভালো, আর ওখানে চাকুরী অবস্থায় দেখা মিলে উলিয়াম পার্চার , সেও একজন কল্পানার মানুষ যার অস্তিত সেই চার্লস হামস্যান এর মতো । সারা দিন একাকি চিন্তা আর গানিতিক সংঙ্গা নিয়ে ভাবতে ভাবতে এক সময় সে তার কল্পনার মানুষগুলোকে বাস্তব মনে করতে থাকে , এরি মধ্যে তারই ছাত্রী অ্যালিসিয়া লার্দের সাথে প্রেম এবং পরে বিয়ে করে । দিন দিন জন তার কাল্পনিক মানুষ গুলোর প্রতি ঝুকে পড়ে , সব বাদ দিয়ে তাদের নিয়ে ভাবে , তার কল্পনার মানুষ ৩ জন , হারস্যান এবং তার বোনের মেয়ে , আরেক জন হলো পার্চার যে কিনা গুপ্তচর , নিজের দেশকে রাশিয়ার হাত থেকে রাক্ষা করতে চেষ্টা করছে , এবং যে চায় জন তাকে সাহায্য করুক , জন তার কথায় রাজিও হয়,ধীরে ধীরে জন এর এই পাগলামী বেড়েই চলেছে, একা থাকে , ঠিক মতো ক্লাস নিতে পারে না ,ক্লাসের মাঝ খানে কল্পনার লোক গুলো এসে হাজির হয় , ডাক্তার নিশ্চিত করলো তার সিজোফ্রেনিয়া হয়েছে , এটি এক ধরণের মানসিক রোগ । এই রোগের আক্রন্ত ব্যাক্তিরা কল্পনা আর বাস্তবের মধ্যে পার্থক্য খুজে পায় না , তাদের একটাই চিকিৎসা তাদের কে বাস্তব এবং কল্পলার মধ্যে যে পার্থক্য সেটা বুঝানো , জন কে অনেক চেষ্টার পরও সেই পার্থক্য বুঝাতে ব্যার্থ হয় ডাঃ রোজিয়া. কিন্তু হাল ছাড়তে না রাজ জন এর স্ত্রী অ্যালিসিয়া , এক সময় জন নিজেই বুঝতে পারে সে একটা বোকার রাজ্যে বাস করছে , এটা তার সপ্ন নয় দুঃসপ্ন , তার মাথায় আসে , চার্লস এর বোনের মেয়েটি বড় হচ্ছেনা , সে সব সময় ছোটই থাকে , এবং সে তখনই বুজতে পারে এইটা তার কল্পনা , তখন সে তার কল্পনার মানুষ গুলোকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে , মাঝে মাঝে ঝগড়া ও করে যা দেখে লোক জন হাসা হাসি করে , এতে জন অপমান বোধ করে । নিজের বিরুদ্ধে নিজির এই লড়াইয়ে সাথে পেয়েছে স্ত্রী অ্যালিসিয়াকে , একদিন থমাস কিং নামক একজন এসে তাকে খবর দেয় তাকে নোবেল প্রাইজের জন্য বিবেচনা করা হয়েছে । আধুনিক অর্থনীতির উপর তাকে নোবের পুষ্কারের নির্বাচিত করা হয়েছে । কথা চলতে থাকে , মি. থমাস কিং তাকে সেই ঘরটির তে গিয়ে জনকে তাদের সাথে চা খেতে বলেন , যেই ঘরটি একদিন তার অধ্যাপক দেখিয়েছেন , এবং সবাই প্রফেসর ম্যাক্সকে কলম দিচ্ছিলেন , এই কয়েক বছরে একবারে জন্যেও সেজন এই ঘরটিতে প্রবেশ করেনি । থমাস কিং এর কথায় আজ সে ওই ঘরে প্রবেশ করলো , এবং একটু পরেই সবাই তাকে কলম দিতে লাগলো. ।
নোবেল পুষ্কার বিতরণী মন্ঞে জন , সে তার ফেলা আসা দিন গুলোর কথা বলছে ,
জন এর কাথা.. সরাসরি তুলে দিলাম – আজকের এই অবস্থানে আসতে গিয়ে আমি আমার পার করতে হয়ে হয়েসেছে এমন কিছু সময় যা কিনা আমার শারীরিক , দার্শন , দৃষ্টিভ্রম এবং ফিরে যেতে হয়েছে আমার পিচনের দিকে । এবং হ্যাঁ আমার কর্ম জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আবিষ্কার করেছি । আবিষ্কার করেছি আমার সারা জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । আর সেটা হলো ভালোবাসার রহস্যময় এক সমীকরণ পৃথিবীতে একমাত্র যেটা যৌক্তিক ও অর্থপূর্ণ বলা যায় । আমি আজ রাতে এইখানে আসতে পেরেছি শূধু তোমার জন্য । তোমার জন্য আমি আমি হতে পেরেছি । আমার সব যুক্তিই তুমি । ধন্যবাদ ,কাথা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই হল রুমে করতালির ধ্বনি বইতে থাকে । আজ জন এর ছেলে হার্ভাড এ পড়ছে ।

আমার দৃষ্টিতে A Beautiful Mind : কি বলবো আসলে সেই কথঅই খুজে পাচ্ছি না ,যদি বলতে যাই তবে এই ভাবেই বলতে হবে একটি স্রেষ্ট অনুপ্রেরণার গল্প, একটি সচ্ছ ভালোবাসার গল্প , কি নেই , সবই আছে , এক কথায় একটি ছবিতে যা থাকার দরকার সবই আছে , চাইলে দেখেনিতে পারে আসা করি ভালো লাগবে ।

তথ্য সুত্র : কিছুটা উইকিপিডিয়া, বাকিটা ছবি দেখে....

Comments

Popular posts from this blog

প্রবাহমান জীবন ও কিছু কথা!

"ফরেস্ট গাম্প " একটি অনুপ্রেরণার গল্প, একটি মৃত প্রাণকে তাজা করার সিনেমা

পানাম নগর, আমার এবেলা ওবেলা