বাংলাদেশে ই-কমার্স
ই-কমার্স কি?
উইকিপিডিয়া থেকে জানা জায়, ইলেকট্রনিক কমার্স বা ই-কমার্স বা ই-বানিজ্য
একটি বানিজ্য ক্ষেত্র যেখানে কোন ইলেকট্রনিক সিস্টেম (ইন্টারনেট বা অন্য
কোন কম্পিউটার নেটওইয়ার্ক) এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয়/ বিক্রয় হয়ে
থাকে। আধুনিক ইলেকট্রনিক কমার্স সাধারণত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর মাধ্যমে
বানিজ্য কাজ পরিচালনা করে। এছাড়াও মোবাইল কমার্স, ইলেকট্রনিক ফান্ড
ট্রান্সফার ও অন্যান্য আরো কিছু মাধ্যম ব্যবহৃত হয়।
এবার আসা যাক সাধারণ সংজ্ঞায়। আমাদের কাছে এখন ই-কমার্স শব্দটি বেশ পরিচিত।
আমরা সাধারণত ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন পণ্য কেনাকাটা করাকেই ই-কমার্স বলে
থাকি।
ব্যবসা-থেকে-ব্যবসা (B2B), ব্যবসা-থেকে-গ্রাহক (B2C), ব্যবসা-থেকে-সরকার
(B2G), গ্রাহক-থেকে-গ্রাহক (C2C), মোবাইল কমার্স (m-commerce) ইত্যাদি
নানাণ প্রকারভেদ রয়েছে এই ই-কমার্সে। তবে বাংলাদেশে ই-কমার্স নতুন শুরু
হওয়ায় বর্তমানে ব্যবসায়-থেকে-গ্রাহক (B2C) পদ্ধতিটিই সাধারণত প্রচলিত
রয়েছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ই-কমার্স
উন্নত বিশ্ব যখন ই-কমার্স ব্যাবসায় মেতে উঠেছে , তখন তাদের সাথে তাল মিলিয়ে একই পথে হাটা শুরু করেছে বাংলাদেশও । যদিও বাংলাদেশে অনেক পরে এসেছে ।
বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসায়টি নতুন। সম্ভবত ২০১০ সালের দিকে বাংলাদেশে চালু
হয় ই-কমার্স এর ধারনা। কিন্তু এখন ২০১৪ সালের প্রেক্ষাপটে বলা যায়, অনেক
জনপ্রিয় ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ই-কমার্স। ২০১০-১১ সালে বাংলাদেশে ই-কমার্সে
মোট ব্যবসার পরিমাণ ছিল ৮০ কোটি টাকা। আর সবচেয়ে বড় কথা হল ২০১৩ সালে
বাংলাদেশে ই-কমার্স ১৫০ শতাংশ বেশি বেড়েছে ২০১২ সালের তুলনায়। এতে সহজেই
বোঝা যায় বাংলাদেশে ই-কমার্স এখন দিনের পর দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে
বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় ই-কমার্সে বেশ পিছিয়ে।
যেখানে উন্নত দেশগুলোর মানুষ অনলাইন শপিং-এর উপরেই বেশী নির্ভরশীল আর
সেখানে আমরা সবেমাত্র অনলাইনে শপিং করা শুরু করেছি । তবে আশার কথা হল
বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে বেশ কিছু ই-কমার্স সাইট এবং তরুণ উদ্যোক্তারা।
আশা করা যায় আর কয়েক বছরের মাঝেই এসব তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টা
বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে ই-কমার্স খাতে এক নতুন কোঠায়। পাশাপাশি এই খাতকে আরও
উন্নত করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন
ই-কমার্স এক অপার সম্ভাবনাময় খাত। যা আমাদের কেনাকাটাকে করবে আরও গতিশীল,
সাশ্রয়ী এবং সহজ।
ই-কমার্স ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের যত আয়োজন
ই-কমার্স ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশে ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( ই-ক্যাব ) নামে একটি সংগঠন আছে । তারা ই-কমার্স উদ্দ্যেক্তাদের কে এই সেক্টর সর্ম্পকে প্রাথমিক জ্ঞান সহ যে কোন সহযোগীতা করে যাচ্ছে । ইতি মধ্যে এই সংগঠনটি বানিজ্য মন্ত্রনালয় এবং এফবিসিসিআই এর সদস্য পদ লাভ করেছে। আমার মনে হয় এটাই প্রথম যে কোন সেক্টর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগেই সেই সেক্টরএর সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । এবং তারা তাদের সদস্যদের জন্য সব রকম সহযোগীতা করে যাচ্ছে । যেহেতু এই সেক্টরটি নতুন তাই কিছুটাতো সমস্যা তো হবে । তবে ই-ক্যাব তাদের সদস্যদের জন্য পেমেন্ট সিস্টেম এবং ডেলিভারী মেথড নিয়ে কাজ করছে । বিকাশের সাথে তাদের সাময়িক চুক্তি এবং ডেলিভারীর জন্য বাংলাদেশ পোস্ট অফিস এর সাথে তাদের আলোচনা চলছে । আর বাংলাদেশ সরকার থেকেও এই সেক্টরকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে , এবং ই-ক্যাবকে সহযোগীতা করছে ।
Comments
Post a Comment